শীতকালে হাতে পায়ের চামড়া উঠে যায় কেন ?
সূচীপত্রে যা যা থাকছে
- শীতকালে হাতে পায়ের চামড়া উঠে যায় কেন
- শুষ্ক আবহাওয়ার প্রভাব
- ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হ্রাস
- অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার
- ত্বকের ধরন ও শীতের প্রভাব
- পুষ্টি ও জলশূন্যতার ভূমিকা
- ত্বকের যত্নে অবহেলা
- প্রতিরোধে প্রাকৃতিক উপায়
- চিকিৎসা ও পণ্যের ব্যবহার
- দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা
- লেখকের কথা
শীতকালে হাতে পায়ের চামড়া উঠে যায় কেন
শীতকালে হাতে-পায়ের চামড়া ওঠার পিছনে প্রধান কারণ হলো পরিবেশের আর্দ্রতার মাত্রা কমে যাওয়া। শীতের সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকে, যা ত্বকের পৃষ্ঠ থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। এই শুষ্কতার কারণে ত্বকের উপরের স্তর, যাকে এপিডার্মিস বলা হয়, তার কোষগুলো শুকিয়ে যায় এবং ফাটল ধরে। ফলে চামড়া উঠতে শুরু করে। এছাড়া, শীতকালে আমরা প্রায়ই গরম পানি ব্যবহার করি, যা ত্বকের প্রাকৃতিক তেলকে ধুয়ে ফেলে। এই তেল ত্বককে নরম ও সুরক্ষিত রাখে। ত্বকের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হলে শুষ্কতা আরও বেড়ে যায়। এটি বিশেষ করে হাত ও পায়ে বেশি দেখা যায়, কারণ এই অংশগুলো বেশি উন্মুক্ত থাকে। শীতের সময় ঠান্ডা বাতাস এবং ঘরের হিটারের তাপ ত্বকের আর্দ্রতা আরও কমিয়ে দেয়। তাই, পরিবেশগত এই পরিবর্তন ত্বকের ক্ষতি করে এবং চামড়া ওঠার সমস্যা তৈরি করে।
এই সমস্যা শুধু পরিবেশের কারণেই হয় না, আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাসও এতে ভূমিকা রাখে। অনেকে শীতকালে ত্বকের যত্নে কম মনোযোগ দেন, যেমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা বা পর্যাপ্ত পানি না পান করা। এছাড়া, শীতকালে আমরা গরম কাপড় পরি, যা ত্বকের সঙ্গে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে। এই ঘর্ষণ ত্বকের উপরের স্তরকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাছাড়া, শীতকালে সূর্যের আলো কম থাকায় ত্বকের ভিটামিন ডি উৎপাদন কমে যায়, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সব কারণ একত্রিত হয়ে শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা এবং চামড়া ওঠার সমস্যাকে আরও তীব্র করে তোলে।
শুষ্ক আবহাওয়ার প্রভাব
শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। শুষ্ক বাতাস ত্বকের পৃষ্ঠ থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়, ফলে ত্বক রুক্ষ ও খসখসে হয়ে যায়। এই সময় ত্বকের উপরের স্তর শুকিয়ে যায় এবং ছোট ছোট ফাটল তৈরি হয়। এই ফাটলগুলো চামড়া ওঠার প্রধান কারণ। বিশেষ করে হাত ও পা, যেগুলো বেশি উন্মুক্ত থাকে, এই শুষ্কতার শিকার হয়। ঠান্ডা বাতাস ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের স্তরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই তেল ত্বককে নরম ও সুরক্ষিত রাখে। শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাছাড়া, শীতকালে বাইরের ঠান্ডা এবং ঘরের হিটারের তাপ ত্বকের আর্দ্রতা আরও কমিয়ে দেয়।
এছাড়া, শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের কোষের পুনর্জনন প্রক্রিয়াকেও বাধাগ্রস্ত করে। সাধারণত ত্বকের কোষ নিয়মিতভাবে নতুন কোষ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। কিন্তু শুষ্কতার কারণে এই প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, ফলে মৃত কোষ ত্বকের পৃষ্ঠে জমা হয়। এই মৃত কোষগুলোই চামড়া হিসেবে উঠে যায়। শীতকালে বাতাসে ধুলোবালি এবং দূষণও ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়। এই উপাদানগুলো ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়, যা ত্বকের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। ফলে ত্বক আরও শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুষ্ক আবহাওয়ার এই প্রভাব কমাতে ত্বকের যত্নে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হ্রাস
ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হ্রাস শীতকালে চামড়া ওঠার একটি বড় কারণ। ত্বকের উপরের স্তরে সিবাম নামক প্রাকৃতিক তেল থাকে, যা ত্বককে আর্দ্র ও নরম রাখে। শীতকালে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস এই তেলের স্তরকে ক্ষয় করে। ফলে ত্বক তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না। এই আর্দ্রতা হ্রাসের ফলে ত্বকের কোষগুলো শুকিয়ে যায় এবং ফাটল ধরে। হাত ও পায়ের ত্বক বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ এই অংশে তেল গ্রন্থি কম থাকে। তাছাড়া, শীতকালে আমরা কম পানি পান করি, যা শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে। এই পানিশূন্যতা ত্বকের আর্দ্রতা আরও কমিয়ে দেয়।
এছাড়া, ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হ্রাসের পিছনে আমাদের জীবনযাত্রাও দায়ী। শীতকালে অনেকে গরম পানি দিয়ে গোসল করেন, যা ত্বকের তেল ও আর্দ্রতা ধুয়ে ফেলে। এছাড়া, হিটার বা রুম ওয়ার্মারের ব্যবহার ঘরের বাতাসকে শুষ্ক করে তোলে, যা ত্বকের আর্দ্রতা কমায়। ত্বকের এই শুষ্কতা কমাতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। তবে অনেকেই এই যত্নে অবহেলা করেন, ফলে ত্বক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে ত্বকের যত্নের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার
শীতকালে গরম পানির ব্যবহার ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়। অনেকে ঠান্ডা আবহাওয়ায় আরামের জন্য গরম পানি দিয়ে গোসল করেন বা হাত-পা ধোয়েন। কিন্তু গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে ফেলে, যা ত্বককে নরম ও সুরক্ষিত রাখে। এই তেলের স্তর ক্ষয় হলে ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়। ফলে হাত ও পায়ের চামড়া উঠতে শুরু করে। বিশেষ করে, দীর্ঘ সময় গরম পানির সংস্পর্শে থাকলে ত্বকের ক্ষতি আরও বেশি হয়। এছাড়া, গরম পানি ত্বকের ছিদ্র খুলে দেয়, যা থেকে আর্দ্রতা বেরিয়ে যায়। এই প্রক্রিয়া ত্বকের শুষ্কতাকে ত্বরান্বিত করে।
গরম পানির অতিরিক্ত ব্যবহার এড়ানো কঠিন, কারণ শীতকালে ঠান্ডা পানি ব্যবহার অস্বস্তিকর। তবে, গরম পানির পরিবর্তে হালকা গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ত্বকের জন্য ভালো। এছাড়া, গোসলের সময় কমানো এবং গোসলের পরপরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। অনেকে গরম পানি দিয়ে বাসন ধোয়ার সময় গ্লাভস ব্যবহার করেন না, যা হাতের ত্বকের ক্ষতি করে। তাই, এই ধরনের কাজে গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত। গরম পানির ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে সচেতনতা ও সঠিক যত্ন জরুরি।
ত্বকের ধরন ও শীতের প্রভাব
ত্বকের ধরন শীতকালে চামড়া ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বক সাধারণত তৈলাক্ত, শুষ্ক, মিশ্র এবং সংবেদনশীল ধরনের হয়। শুষ্ক ত্বকের মানুষ শীতকালে বেশি সমস্যায় পড়েন, কারণ তাদের ত্বকে প্রাকৃতিক তেলের পরিমাণ কম থাকে। শীতের শুষ্ক বাতাস এই ত্বকের আর্দ্রতা আরও কমিয়ে দেয়, ফলে চামড়া ওঠার সমস্যা তীব্র হয়। তৈলাক্ত ত্বকের মানুষ তুলনামূলকভাবে কম সমস্যায় পড়লেও, শীতের ঠান্ডা বাতাস তাদের ত্বকের তেলের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে শীতকালে লালভাব, চুলকানি এবং চামড়া ওঠার সমস্যা বেশি দেখা যায়।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী শীতকালে যত্ন নেওয়া জরুরি। শুষ্ক ত্বকের জন্য ঘন ময়েশ্চারাইজার এবং তেল-ভিত্তিক পণ্য ব্যবহার করা উচিত। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হালকা, নন-কমেডোজেনিক ময়েশ্চারাইজার ভালো। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সুগন্ধিমুক্ত এবং হাইপোঅ্যালার্জেনিক পণ্য বেছে নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া, ত্বকের ধরন নির্বিশেষে শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত, কারণ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শীতেও ত্বকের ক্ষতি করে। ত্বকের ধরন বুঝে সঠিক যত্ন নিলে শীতকালে চামড়া ওঠার সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
পুষ্টি ও জলশূন্যতার ভূমিকা
শীতকালে ত্বকের স্বাস্থ্যে পুষ্টি ও জলশূন্যতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শীতকালে অনেকে কম পানি পান করেন, কারণ তৃষ্ণা কম অনুভূত হয়। এই পানিশূন্যতা ত্বকের আর্দ্রতা কমায়, ফলে চামড়া শুষ্ক ও খসখসে হয়। তাছাড়া, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো পুষ্টি ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। শীতকালে ফল, শাকসবজি এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার কম খাওয়া ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়। এই পুষ্টির অভাবে ত্বকের কোষ পুনর্জনন ধীর হয়, ফলে চামড়া ওঠার সমস্যা তীব্র হয়।
পুষ্টি ও জলশূন্যতার ভারসাম্য রক্ষা করতে নিয়মিত পানি পান করা জরুরি। শীতকালে গরম পানি বা হারবাল চা পান করা পানিশূন্যতা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, বাদাম, অ্যাভোকাডো, মাছ এবং শাকসবজির মতো খাবার ত্বকের জন্য উপকারী। ভিটামিন ই ত্বককে নরম রাখে, আর ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। এছাড়া, অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা ত্বকের জন্য ভালো। পুষ্টি ও পানির সঠিক ভারসাম্য ত্বককে সুস্থ ও নরম রাখে।
ত্বকের যত্নে অবহেলা
শীতকালে ত্বকের যত্নে অবহেলা চামড়া ওঠার একটি বড় কারণ। অনেকে শীতকালে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে গুরুত্ব দেন না, যা ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া, অনেকে শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন না, যদিও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শীতেও ত্বকের ক্ষতি করে। ত্বকের যত্নে অবহেলার আরেকটি দিক হলো রুক্ষ সাবান বা কঠোর রাসায়নিকযুক্ত পণ্য ব্যবহার। এই পণ্যগুলো ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে ফেলে, ফলে চামড়া ওঠার সমস্যা বাড়ে।
ত্বকের যত্নে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। গোসলের পর ত্বক শুকিয়ে যাওয়ার আগেই ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। এছাড়া, হাত ধোয়ার জন্য মৃদু, ময়েশ্চারাইজিং সাবান ব্যবহার করা ভালো। শীতকালে ত্বকের এক্সফোলিয়েশনও গুরুত্বপূর্ণ, তবে অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েশন ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। সপ্তাহে একবার মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করা মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের যত্নে নিয়মিত রুটিন মেনে চললে শীতকালে চামড়া ওঠার সমস্যা অনেকাংশে কমে।
প্রতিরোধে প্রাকৃতিক উপায়
শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা কমাতে প্রাকৃতিক উপায় খুবই কার্যকর। নারকেল তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে হাতে-পায়ে নারকেল তেল মাখলে ত্বক নরম থাকে। এছাড়া, মধু ত্বকের শুষ্কতা কমায় এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণের কারণে ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। অ্যালোভেরা জেল ত্বককে প্রশান্তি দেয় এবং আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে। এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ত্বকের জন্য নিরাপদ এবং সহজলভ্য। তাছাড়া, ঘি বা দুধের সর ত্বকের শুষ্কতা কমাতে পুরনো কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
প্রাকৃতিক উপায়ের পাশাপাশি জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনাও জরুরি। শীতকালে ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা বাতাসের আর্দ্রতা বাড়ায়, যা ত্বকের শুষ্কতা কমায়। এছাড়া, ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল বা বাদাম তেলের মতো তেল ব্যবহার করা ত্বককে নরম রাখে। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের সময় ত্বকের ধরন বিবেচনা করা উচিত। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য অল্প পরিমাণে উপাদান পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। এই প্রাকৃতিক উপায়গুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক সুস্থ ও নরম থাকে।
চিকিৎসা ও পণ্যের ব্যবহার
শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা তীব্র হলে চিকিৎসা ও পণ্যের ব্যবহার প্রয়োজন হতে পারে। বাজারে অনেক ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়, যেগুলোতে সিরামাইড, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এবং গ্লিসারিন থাকে। এই উপাদানগুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শুষ্কতা কমায়। তবে, ত্বকের ধরন অনুযায়ী পণ্য বেছে নেওয়া জরুরি। শুষ্ক ত্বকের জন্য ঘন ক্রিম ভালো, আর তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হালকা লোশন উপযুক্ত। এছাড়া, সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সুগন্ধিমুক্ত পণ্য ব্যবহার করা উচিত। ত্বকের শুষ্কতা তীব্র হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের শুষ্কতার জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয়। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা হাইড্রোকর্টিসোন ক্রিম বা অন্যান্য স্টেরয়েড ক্রিমের পরামর্শ দিতে পারেন। এই ক্রিমগুলো ত্বকের প্রদাহ ও চুলকানি কমায়। তবে, এই ওষুধগুলো দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের জন্য নয়। ত্বকের যত্নে পণ্য ব্যবহারের সময় নিয়ম মেনে চলা জরুরি। গোসলের পরপরই ময়েশ্চারাইজার লাগানো এবং দিনে দুইবার ত্বকের যত্ন নেওয়া ত্বকের শুষ্কতা কমায়। সঠিক পণ্য ও চিকিৎসা ত্বককে সুস্থ রাখে।
দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা
দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় নিয়মিত যত্ন ও সচেতনতা জরুরি। শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা কমাতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া, সারা বছর ত্বকের যত্নের রুটিন মেনে চলা ত্বককে সুস্থ রাখে। সানস্ক্রিন ব্যবহার শীতকালেও ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বকের পুষ্টির জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার, যেমন ফল, শাকসবজি এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। পর্যাপ্ত পানি পান করা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় জীবনযাত্রার পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান ত্বকের ক্ষতি করে। এছাড়া, পর্যাপ্ত ঘুম ত্বকের কোষ পুনর্জননে সাহায্য করে। ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান এবং মানসম্পন্ন পণ্য ব্যবহার করা ত্বকের ক্ষতি কমায়। ত্বকের সমস্যা তীব্র হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সঠিক যত্ন ও সচেতনতা ত্বককে সুন্দর ও সুস্থ রাখে।
লেখকের কথা
শীতকালে হাতে-পায়ের চামড়া ওঠার সমস্যা সাধারণ হলেও, সঠিক যত্ন ও সচেতনতার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শুষ্ক আবহাওয়া, গরম পানির ব্যবহার, ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হ্রাস এবং পুষ্টির অভাব এই সমস্যার প্রধান কারণ। ত্বকের ধরন বুঝে সঠিক যত্ন, প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার এবং মানসম্পন্ন পণ্য ত্বকের শুষ্কতা কমায়। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার, পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার ত্বককে নরম ও সুস্থ রাখে। দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এবং নিয়মিত যত্ন জরুরি। ত্বকের যত্নে অবহেলা না করে সঠিক পদক্ষেপ নিলে শীতকালেও ত্বক সুন্দর ও সমস্যামুক্ত থাকবে।
ইনফো লাগবের নীতিমালা জেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়। ;
comment url