খুব সহজে টাকা ইনকাম করার সেরা ১০টি উপায়

  

বর্তমান সময়ে ঘরে বসে সহজেই টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন অনেকেই অনলাইন এবং অফলাইন মাধ্যমে আয় করছে। এখানে আমরা খুব সহজে টাকা
খুব-সহজে-টাকা-ইনকাম-করার-সেরা-১০টি-উপায়
ইনকাম করার সেরা ১০টি উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন অনেকেই তাদের কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং বা পার্ট-টাইম আয়ের মাধ্যমে বাড়তি অর্থ উপার্জন করছেন।

সূচীপত্রে যা যা থাকছে

১.খুব সহজে টাকা ইনকাম করার উপায়

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় একটি আয়ের উপায়। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি নিজের দক্ষতা ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের ক্লায়েন্টের জন্য কাজ করতে পারেন। Upwork, Fiverr, Freelancer এর মতো প্ল্যাটফর্মে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায়। শুরু করতে আপনার শুধু একটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ এবং একটি নির্দিষ্ট দক্ষতা প্রয়োজন। প্রথমে ছোট ছোট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে আপনার প্রোফাইল শক্তিশালী করুন। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা প্রতি মাসে হাজার থেকে লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার প্রোফাইল পেশাদার রাখা এবং ক্লায়েন্টের সাথে ভালো যোগাযোগ বজায় রাখা।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের আরেকটি সুবিধা হলো নমনীয় কাজের সময়। আপনি নিজের সুবিধামতো সময়ে কাজ করতে পারেন, যা বিশেষ করে শিক্ষার্থী বা চাকরিজীবীদের জন্য আদর্শ। তবে, প্রতিযোগিতা এখানে অনেক বেশি, তাই নিজেকে আলাদা করে তুলতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে দক্ষ হন, তাহলে আপনার পোর্টফোলিওতে কিছু নমুনা প্রজেক্ট যুক্ত করুন। এছাড়া, ক্লায়েন্টের রিভিউ এবং রেটিং আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। ফ্রিল্যান্সিংয়ে ধৈর্য এবং নিয়মিত কাজের প্রতি নিষ্ঠা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতে আয় কম হতে পারে, কিন্তু অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে  সাথে আপনার ইনকামও বাড়বে।

২.কনটেন্ট রাইটিং এবং ব্লগিং

কনটেন্ট রাইটিং এবং ব্লগিং এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে আপনি আপনার লেখার দক্ষতাকে
ব্লগিংয়ে সাফল্যের জন্য ধৈর্য প্রয়োজন, কারণ আয় শুরু হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। তবে, একবার আপনার সাইটে ভিজিটর বাড়লে, এটি একটি স্থিতিশীল আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্যাশন, ট্রাভেল, টেকনোলজি বা রান্নার মতো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্লগিং করুন। বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় ব্লগিংয়ের চাহিদাও বাড়ছে। আপনার লেখা যদি পাঠকের কাছে মূল্যবান হয়, তাহলে তারা বারবার আপনার সাইটে ফিরে আসবে। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার ব্লগ প্রমোট করলে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়। কনটেন্ট রাইটিংয়ে প্রতি লেখার জন্য ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

কাজে লাগিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায়ই কনটেন্ট রাইটারের চাহিদা রয়েছে। আপনি ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্মে ক্লায়েন্টদের জন্য আর্টিকেল, ব্লগ পোস্ট, পণ্যের বিবরণ ইত্যাদি লিখতে পারেন। এছাড়া, নিজের ব্লগ সাইট তৈরি করে Google AdSense বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। শুরু করতে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করুন, যেমন WordPress বা Blogger ব্যবহার করে। এরপর, নিয়মিত মানসম্পন্ন কনটেন্ট পোস্ট করুন। এসইও (Search Engine Optimization) শিখে আপনার লেখা গুগলের প্রথম পাতায় আনার চেষ্টা করুন।

৩. ইউটিউব চ্যানেল শুরু করা

ইউটিউব বর্তমানে টাকা ইনকামের একটি দারুণ মাধ্যম। আপনার যদি কোনো বিষয়ে জ্ঞান বা প্রতিভা থাকে, তাহলে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করা শুরু করুন। বাংলাদেশে রান্না, শিক্ষা, টেক রিভিউ, ভ্লগিং ইত্যাদি বিষয়ে চ্যানেল খুব জনপ্রিয়। শুরু করতে একটি স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগই যথেষ্ট। ভিডিওর গুণগত মান ভালো রাখুন এবং নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করুন। ইউটিউব মনিটাইজেশনের জন্য আপনার চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম প্রয়োজন। এছাড়া, স্পনসরশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও আয় করা যায়।

ইউটিউবের সাফল্য নির্ভর করে আপনার কনটেন্টের আকর্ষণীয়তা এবং দর্শকদের সাথে সংযোগের উপর। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি রান্নার ভিডিও বানান, তাহলে সহজ এবং সাশ্রয়ী রেসিপি শেয়ার করুন। ভিডিওর থাম্বনেইল এবং শিরোনাম আকর্ষণীয় করুন, যাতে দর্শক ক্লিক করতে আগ্রহী হয়। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ভিডিও শেয়ার করে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার বাড়ান। বাংলাদেশে অনেক ইউটিউবার প্রতি মাসে ১০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। তবে, ধৈর্য এবং নিয়মিত কাজ এখানে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে আয় কম হলেও, সঠিক কৌশলে এটি একটি পূর্ণকালীন ক্যারিয়ারে রূপান্তরিত হতে পারে।

৪. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি উপায়, যেখানে আপনি অন্যের পণ্য বা সেবা প্রচার করে কমিশন আয় করেন। Amazon, Daraz, ClickBank এর মতো প্ল্যাটফর্মে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনার কাজ হলো একটি নির্দিষ্ট পণ্যের লিঙ্ক শেয়ার করা, এবং কেউ সেই লিঙ্কের মাধ্যমে কেনাকাটা করলে আপনি কমিশন পাবেন। এটি করতে আপনার একটি ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। বাংলাদেশে Daraz এবং Evaly এর অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম বেশ জনপ্রিয়। শুরু করতে প্রথমে একটি নিশ (বিষয়) নির্বাচন করুন, যেমন গ্যাজেট, ফ্যাশন বা বই।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সাফল্যের জন্য আপনার অডিয়েন্সের উপর ভরসা অর্জন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি টেক গ্যাজেট নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন, তাহলে সেই বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য রিভিউ দিন। আপনার শেয়ার করা লিঙ্কগুলো যেন স্প্যামি না মনে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এছাড়া, এসইও এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখে আপনার কনটেন্ট বেশি মানুষের কাছে পৌঁছান। বাংলাদেশে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে মাসে ৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। এটি একটি প্যাসিভ ইনকামের উৎস, যার মানে একবার কনটেন্ট তৈরি করলে তা দীর্ঘদিন আয় করে দিতে পারে। তবে, শুরুতে সময় এবং পরিশ্রম বিনিয়োগ করতে হবে।

৫. অনলাইন টিউশন বা কোর্স বিক্রি

অনলাইন টিউশন বা কোর্স বিক্রি বাংলাদেশে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আপনি যদি কোনো বিষয়ে দক্ষ হন, যেমন ইংরেজি, গণিত, প্রোগ্রামিং বা এমনকি নাচ, তাহলে তা শেখানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। Zoom, Google Meet এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে লাইভ ক্লাস নিতে পারেন। এছাড়া, Udemy, Teachable এর মতো প্ল্যাটফর্মে প্রি-রেকর্ডেড কোর্স তৈরি করে বিক্রি করা যায়। বাংলাদেশে 10 Minute School এর মতো প্ল্যাটফর্মও এই ধরনের কাজের সুযোগ দিচ্ছে। শুরু করতে আপনার বিষয়ে দক্ষতা, একটি ভালো মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরা প্রয়োজন।

অনলাইন টিউশনের সুবিধা হলো, আপনি দেশের বাইরের শিক্ষার্থীদেরও পড়াতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি ইংরেজি শেখান, তাহলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে এটি বেশি আকর্ষণীয় হতে পারে। আপনার কোর্স বা ক্লাসের গুণগত মান বজায় রাখুন এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নশীল হোন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ক্লাস বা কোর্স প্রমোট করলে দ্রুত ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়। বাংলাদেশে একজন অনলাইন টিউটর প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আয় করতে পারেন। এছাড়া, কোর্স বিক্রি করে একবার কনটেন্ট তৈরি করলেই বারবার আয় করা সম্ভব। এটি একটি সম্মানজনক এবং লাভজনক পেশা।

৬. ই-কমার্স বা অনলাইন দোকান

ই-কমার্স বা অনলাইন দোকান বাংলাদেশে খুব দ্রুত বাড়ছে। আপনি Daraz, Bikroy বা Facebook Marketplace এর মতো প্ল্যাটফর্মে নিজের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া, নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে বা Instagram এর মাধ্যমেও ব্যবসা শুরু করা যায়। পণ্য হিসেবে হস্তশিল্প, পোশাক, গয়না বা খাবার বেছে নিতে পারেন। শুরু করতে অল্প পুঁজি এবং সঠিক মার্কেটিং কৌশল প্রয়োজন। বাংলাদেশে অনেকে ফেসবুক পেজ খুলে ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করছেন। গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে ভালো ছবি এবং পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ দিন।

ই-কমার্সে সাফল্যের জন্য গ্রাহক সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, দ্রুত ডেলিভারি এবং পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করুন। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে আপনার পণ্য বেশি মানুষের কাছে পৌঁছান। বাংলাদেশে অনেকে শুধু ফেসবুক মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মাসে ২০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা আয় করছেন। তবে, প্রতিযোগিতা এড়াতে অনন্য পণ্য বা সেবা অফার করুন। উদাহরণস্বরূপ, স্থানীয় হস্তশিল্প বা কাস্টমাইজড পণ্য বিক্রি করলে গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ে। ই-কমার্সে ধৈর্য এবং গ্রাহকদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসার সুযোগ।

৭. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট বর্তমানে একটি লাভজনক পেশা। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড এবং ইনফ্লুয়েন্সাররা তাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন পেজ পরিচালনার জন্য পেশাদার লোক নিয়োগ করে। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে দক্ষ হন, তাহলে এই কাজ আপনার জন্য। কাজের মধ্যে রয়েছে পোস্ট তৈরি, বিজ্ঞাপন পরিচালনা, এবং ফলোয়ারদের সাথে যোগাযোগ। ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের কাজ পাওয়া যায়, অথবা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করেও ক্লায়েন্ট পাওয়া সম্ভব। শুরু করতে কিছু ফ্রি টুল, যেমন Canva বা Hootsuite, শিখে নিন।

এই ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য ক্রিয়েটিভিটি এবং ট্রেন্ড সম্পর্কে জানাশোনা জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি কোনো রেস্টুরেন্টের পেজ ম্যানেজ করেন, তাহলে খাবারের আকর্ষণীয় ছবি এবং ক্যাপশন ব্যবহার করুন। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের কৌশল শিখে ক্লায়েন্টের বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করুন। বাংলাদেশে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার প্রতি মাসে ১০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা আয় করতে পারেন। এটি এমন একটি কাজ, যা ঘরে বসেই করা যায় এবং সময়ের সাথে দক্ষতা বাড়লে আয়ও বাড়ে। তবে, ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝে কাজ করা এবং নিয়মিত আপডেট থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৮. ড্রপশিপিং ব্যবসা

ড্রপশিপিং হলো এমন একটি ব্যবসা, যেখানে আপনাকে পণ্য স্টক করতে হয় না। আপনি শুধু একটি অনলাইন দোকান খুলবেন এবং সেখানে সরবরাহকারীর পণ্য তালিকাভুক্ত করবেন। কেউ অর্ডার দিলে সরবরাহকারী সরাসরি গ্রাহকের কাছে পণ্য পাঠাবে। বাংলাদেশে Daraz বা Shopify এর মাধ্যমে ড্রপশিপিং শুরু করা যায়। শুরু করতে অল্প পুঁজি এবং মার্কেটিং দক্ষতা প্রয়োজন। আপনি চাইলে বিদেশি সরবরাহকারী, যেমন AliExpress, থেকে পণ্য তালিকাভুক্ত করতে পারেন। গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে ভালো মানের ছবি এবং পণ্যের বিবরণ ব্যবহার করুন।

ড্রপশিপিংয়ে সাফল্যের জন্য সঠিক পণ্য নির্বাচন এবং মার্কেটিং কৌশল গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, ট্রেন্ডি পণ্য, যেমন গ্যাজেট বা ফ্যাশন আইটেম, বেছে নিন। এছাড়া, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন চালিয়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছান। বাংলাদেশে ড্রপশিপিং থেকে মাসে ১০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে, গ্রাহক সেবা এবং ডেলিভারি সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, সরবরাহকারীর উপর নির্ভর করতে হয় বলে কখনো কখনো সমস্যা হতে পারে। এটি এমন একটি ব্যবসা, যা সঠিক পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদী আয়ের উৎস হতে পারে।

৯. গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিডিও এডিটিং

গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিডিও এডিটিং বর্তমানে খুব চাহিদাসম্পন্ন পেশা। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ইউটিউবার এবং বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলোর জন্য লোগো, ব্যানার, এবং ভিডিও কনটেন্ট প্রয়োজন। আপনি Adobe Photoshop, Illustrator, বা Premiere Pro এর মতো সফটওয়্যার শিখে এই কাজ শুরু করতে পারেন। ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়। শুরু করতে একটি ভালো কম্পিউটার এবং কিছু ফ্রি টুল, যেমন Canva বা DaVinci Resolve, ব্যবহার করতে পারেন।

এই ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য ক্রিয়েটিভিটি এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা বোঝা জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি কোনো ব্র্যান্ডের জন্য লোগো ডিজাইন করেন, তাহলে তাদের ব্র্যান্ডের স্টাইল অনুযায়ী কাজ করুন। এছাড়া, আপনার পোর্টফোলিওতে বিভিন্ন ধরনের কাজ যুক্ত করুন, যাতে ক্লায়েন্টরা আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পায়। বাংলাদেশে একজন গ্রাফিক ডিজাইনার বা ভিডিও এডিটর প্রতি প্রজেক্টে ২,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা আয় করতে পারেন। এটি এমন একটি কাজ, যা ঘরে বসেই করা যায় এবং সময়ের সাথে দক্ষতা বাড়লে আয়ও বাড়ে। নিয়মিত নতুন ট্রেন্ড শেখা এই পেশায় গুরুত্বপূর্ণ।

১০. অনলাইন সার্ভে এবং মাইক্রোটাস্ক

অনলাইন সার্ভে এবং মাইক্রোটাস্ক এমন একটি উপায়, যেখানে খুব কম দক্ষতা দিয়েও টাকা আয় করা যায়। Swagbucks, ySense, Amazon Mechanical Turk এর মতো প্ল্যাটফর্মে সার্ভে পূরণ, ডাটা এন্ট্রি, বা ছোট ছোট কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এই কাজগুলো করতে বিশেষ কোনো দক্ষতার প্রয়োজন নেই, শুধু ইন্টারনেট সংযোগ এবং একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থাকলেই চলে। বাংলাদেশে অনেকে এই ধরনের কাজ করে অতিরিক্ত আয় করছেন। শুরু করতে এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করুন এবং প্রোফাইল পূরণ করুন।

অনলাইন সার্ভে এবং মাইক্রোটাস্কে আয় তুলনামূলক কম হলেও, এটি অতিরিক্ত ইনকামের জন্য আদর্শ। উদাহরণস্বরূপ, আপনি প্রতিদিন ১-২ ঘণ্টা সময় দিয়ে মাসে ২,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা আয় করতে পারেন। তবে, স্ক্যাম সাইট থেকে সাবধান থাকুন এবং শুধু বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন। এছাড়া, কাজের ধরন অনুযায়ী সময় ব্যবস্থাপনা করুন, যাতে আপনি বেশি কাজ করতে পারেন। এই কাজগুলো বিশেষ করে শিক্ষার্থী বা গৃহিণীদের জন্য উপযুক্ত। এটি এমন একটি উপায়, যা থেকে শুরু করে আপনি পরে আরো বড় কাজে যেতে পারেন। ধৈর্য এবং নিয়মিত কাজ এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

লেখের কথা

উপরে আলোচিত ১০টি উপায় প্রমাণ করে যে, আজকের ডিজিটাল যুগে টাকা ইনকামের অসংখ্য সুযোগ রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং থেকে শুরু করে ইউটিউব, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা ই-কমার্স—প্রতিটি উপায়েই সঠিক দক্ষতা এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনি আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই উপায়গুলো ব্যবহারিক এবং অল্প সম্পদ দিয়েও শুরু করা সম্ভব। তবে, সাফল্যের জন্য ধৈর্য, নিয়মিত কাজ এবং নতুন কিছু শেখার মানসিকতা প্রয়োজন। আজই আপনার পছন্দের উপায়টি বেছে নিন, ছোট থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে আপনার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান। আর্থিক স্বাধীনতার পথে এই পদক্ষেপগুলো আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে!ন এবং আয় করা শুরু করুন!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইনফো লাগবের নীতিমালা জেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়। ;

comment url